Type Here to Get Search Results !

Subscribe Us

পুজোর মণ্ডপে ভয়াবহ থিম, দেবী আবাহনের বদলে খুনের দৃশ্য!

ঢাকের বাদ্যি, আলো-ঝলমলে আলপনা আর ধূপের গন্ধে মোড়া শারদোৎসবের আবহে সাধারণত দেখা যায় দেব-অসুরের লড়াই কিংবা বাঙালির ঐতিহ্যের নানা ছবি। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ায় একটি পুজো মণ্ডপে যা দেখা গেল, তাতে শিউরে উঠেছেন বহু দর্শনার্থী।
স্টেশন রোডের ‘মা শক্তি ক্লাব’ এ বছর থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে একটি চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা। মণ্ডপের কেন্দ্রস্থলে রাখা হয়েছে একটি বিশাল নীল ড্রাম, যার ভিতর থেকে বেরিয়ে রয়েছে রক্তাক্ত দেহ। পাশে খুনের অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক নারী ও এক পুরুষ, যাদের পোশাকে ফুটে উঠেছে অভিযুক্তদের চরিত্র। মাটিতে পড়ে রয়েছে সিমেন্টের বস্তা। ড্রামের গায়ে আবার ভোজপুরি গানের একটি লাইন—“দো বোরা সিমেন্ট ড্রাম অউর লেবু কা হো”—যা দৃশ্যটিকে আরও বীভৎস ও ব্যঙ্গাত্মক করে তুলেছে।

কেন এই থিম?

পুজো কমিটির সভাপতি প্রদীপ কুমার চৌরাসিয়ার দাবি, “আমাদের উদ্দেশ্য সমাজকে সতর্ক করা। অবৈধ সম্পর্ক কতটা ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে, সেটাই দেখাতে চাই।” তবে এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ অনেক দর্শনার্থী। তাঁদের মতে, দেবী আবাহনের মণ্ডপে এমন রক্তাক্ত দৃশ্য একেবারেই অনুচিত।

এক তরুণ দর্শনার্থী মন্তব্য করেন, “এই থিম থেকে শিক্ষা নেওয়ার মতো বিষয় আছে। মানুষ বুঝবে, মুহূর্তের ভুল কত বড় সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে।” কিন্তু প্রবীণদের একাংশের বক্তব্য, “এটা রুচিহীন। শিশুরা যদি এমন দৃশ্য দেখে, তবে তাদের মনে খারাপ প্রভাব পড়বে।”

বাস্তব ঘটনার অনুপ্রেরণা

এই থিমের নেপথ্যে রয়েছে চলতি বছরের মার্চ মাসে উত্তরপ্রদেশের মিরাটের এক মর্মান্তিক খুন। প্রাক্তন মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতকে তাঁর স্ত্রী মুসকান রাস্তগী ও প্রেমিক সাহিল মিলে খুনের অভিযোগ ওঠে। প্রথমে মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করা হয় সৌরভকে, তারপর ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। দেহ গোপন করতে কেটে ফেলা হয় মাথা ও হাত, আর মূল দেহাংশ সিমেন্ট মিশিয়ে লুকিয়ে রাখা হয় একটি নীল ড্রামের মধ্যে। বর্তমানে মুসকান ও সাহিল দু’জনেই জেল হেফাজতে। শোনা যাচ্ছে, কারাগারে থাকার সময়ই মুসকানের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর সামনে এসেছে।

বিতর্কে ফেটে পড়ল জনমত

পুজোর আবহে এই থিম একদিকে সমাজে সচেতনতার বার্তা দেওয়ার দাবি তুললেও, অন্যদিকে নৃশংস অপরাধকে উৎসবের মঞ্চে টেনে আনার কারণে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকের মতে, এই ধরনের আয়োজন অপরাধকে জনপ্রিয় করে তুলতে পারে।

সব মিলিয়ে, দেওরিয়ার “নীল ড্রামওয়ালি” পুজো এই বছরের অন্যতম আলোচিত থিম হয়ে উঠেছে। দেবী আবাহনের আনন্দের পাশাপাশি এটি দর্শকদের মনে তুলেছে ভয়ের ছায়া ও প্রশ্নের ঝড়—উৎসবের মঞ্চে নৃশংসতার জায়গা হওয়া উচিত কি না?

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad