মুম্বাইয়ের বিনোদন অঙ্গন এবং রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন ফেলেছে ২৫২ কোটি টাকার মেফেড্রোন পাচার মামলার তদন্ত। মুম্বাই পুলিশের রিম্যান্ড কপিতে দাবি করা হয়েছে, মাদকচক্রের মূল সন্দেহভাজন মোহাম্মদ সেলিম মোহাম্মদ সুহেল শেখ জিজ্ঞাসাবাদের সময় বেশ কয়েকজন পরিচিত ব্যক্তিত্বের নাম উল্লেখ করেছেন, যারা নাকি বিভিন্ন বিলাসবহুল পার্টিতে যোগ দিতেন। তবে এসব নামের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বা প্রমাণ উপস্থাপন করেনি তদন্তকারী সংস্থা।
মূল অভিযুক্তের প্রত্যর্পণ
দুবাই থেকে প্রত্যর্পণের পর মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ ৩১ বছর বয়সি শেখকে গ্রেপ্তার করে। ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এ একটি ছোট অভিযানের সূত্র ধরে যে তদন্ত শুরু হয়েছিল, সেই মামলায় এ পর্যন্ত মোট ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তদন্ত সূত্রের দাবি, ডংরির বাসিন্দা শেখ আন্ডারওয়ার্ল্ড কারবারি সেলিম ডোলার ঘনিষ্ট সহযোগী। ডোলারের সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিম সিন্ডিকেটের সম্পর্ক থাকার অভিযোগও তদন্তকারীদের নথিতে উল্লেখ রয়েছে।
রিম্যান্ড কপির দাবি
রিম্যান্ড কপিতে দাবি করা হয়েছে—
শেখ জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, ভারতসহ বিদেশেও নাকি বেশ কিছু উচ্চপ্রোফাইল পার্টির আয়োজন হত, যেখানে কিছু বলিউড সেলিব্রিটি ও পরিচিত রাজনৈতিক পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত থাকতেন।
উল্লেখ করা নামগুলির মধ্যে রয়েছেন—
অভিনেত্রী শ্রদ্ধা কাপুর
তাঁর ভাই সিদ্ধার্থ কাপুর
অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী নোরা ফাতেহি
কংগ্রেস নেতা বাবা সিদ্দিকীর ছেলে ও রাজনীতিবিদ জিশান সিদ্দিকী
হাসিনা পার্কারের ছেলে আলিশাহ পার্কার
পরিচালক জুটি আব্বাস–মাস্তান
র্যাপার লোকা
তবে এই ব্যক্তিরা কেউই এ মামলায় অভিযুক্ত নন, এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রমাণ বা আনুষ্ঠানিক নোটিস জারি হওয়ার বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, রিম্যান্ড কপিতে উল্লেখ থাকা মানেই দোষী সাব্যস্ত হওয়া নয় — তদন্তের স্বার্থে সব তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মাদকের অর্থ কোথায় যাচ্ছিল?
ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) সন্দেহ করছে, মাদক ব্যবসার আয় হাওয়ালা নেটওয়ার্ক ও কিছু রিয়েল এস্টেট প্রকল্পে বিনিয়োগ করে বৈধ অর্থে রূপান্তর করা হচ্ছিল। এ কারণে ED ও ক্রাইম ব্রাঞ্চ যৌথভাবে তদন্ত চালাচ্ছে।
দেশ-বিদেশে পার্টির অভিযোগ
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, গোয়া ও মুম্বাই ছাড়াও দুবাই ও থাইল্যান্ডে নাকি বহু পার্টির আয়োজন করা হত। ভারতীয় বংশোদ্ভূত কিছু ব্যবসায়ীর মাধ্যমে মাদক সরবরাহের কথাও জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে— এমনটাই দাবি তদন্তকারী সূত্রের।
আসন্ন জিজ্ঞাসাবাদ
ক্রাইম ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, রিম্যান্ড কপিতে যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে আগামী দিনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে। তবে তলব করা মানেই অভিযুক্ত হওয়া নয়— সম্পূর্ণ বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন।